রজত নিয়োগী, ট্রান্সিশন ম্যাগাজিন এবং স্বাধীনতাত্তোর উগান্ডায় “এশীয় প্রশ্ন”
১৯৬১ সালের নভেম্বরের এক বিকেলে এক যুবক, যার ‘মুখভর্তি দাড়ি, ঝাঁকড়া চুল, গম্ভীর চোখ’, হাতে একটা ইংরেজি সাময়িকের কিছু সংখ্যা নিয়ে কাম্পালার একটি বারে প্রবেশ করে। সে যখন জনাকীর্ণ বারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলো এক ইংরেজ ম্যাগাজিনের একটি কপি মাটিতে ছুড়ে ফেলে, সেটাকে পদদলিত করে বলে ‘এই ম্যাগাজিন সম্পর্কে আমি এটাই মনে করি’। ম্যাগাজিনটি ছিল ট্রান্সিশন এর প্রথম সংখ্যা আর সেই যুবকটা ছিল তেইশ বছরের রজত নিয়োগী, যাকে ওলে সোয়িঙ্কা ট্রান্সিশনের ধাত্রী হিসেবে বর্ণনা করেছেন । চৌত্রিশতম সংখ্যায় ম্যাগাজিনের বিজ্ঞাপন ব্যাবস্থাপক ভ্যালেরি হুম বলেছেন ‘ঠিক এভাবেই শুরু হয়’ ট্রান্সিশন। কিছু বছরের মধ্যেই ম্যাগাজিনটি একটি প্রাতিষ্টানিক রূপ নেয় ।
পূর্ব আফ্রিকার সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক জগতে ট্রান্সিশন অমনি একটা ম্যাগাজিন ছিল যেখানে বিদ্রোহ, অগ্রসর চিন্তা, প্রথা ভাঙার আকাঙ্খা প্রকাশ পায়। এর পাতায় ছাপা হতো কবিতা প্রবন্দ, বিশ্লেষণধর্মী ও সমালোচনামূলক নিবন্ধ, এবং আঁকা । ট্রান্সিশনের উদ্দেশই ছিল পূর্ব আফ্রিকার রাজনৈতিক, সামাজিক, ও সাংস্কৃতিক আলোচনার জন্য একটি প্লাটফর্ম তৈরী করে দেয়া । বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয়ের লেখা এখানে প্রকাশ পেতো, যেমন জাতি এবং বর্ণবাদ সম্পর্কিত বিষয়, বাক স্বাধীনতা, রাষ্ট্র নীতি, গণতন্ত্র, বৈদেশিক সাহায্য, ও মানবাধিকার । পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকার বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষার্থীর মধ্যে ট্রান্সিশন একটি আলোড়ন সৃষ্টি করে। ট্রান্সিশন ছিল ‘ আফ্রিকার তাত্ত্বিক ও শৈল্পিক বিকাশের প্রথম ফোরাম’।
One afternoon in November 1961, a young man with a “[b]ig beard, lots of hair [and] huge black brooding eyes” (Hume 1967, 35), walked into a bar in Kampala carrying copies of an English-language magazine. As the young man pushed through the lunchtime crowd, an Englishman tore a copy, stomped on it, and shouted: “That’s what I think of your magazine!” (Hume 1967, 35).
The magazine was the first issue of Transition, and the young man was the twenty-three-year-old Rajat Neogy, described by Wole Soyinka (1974) as the “midwife” at whose hands Transition was born. As recounted by the magazine’s advertising manager, Valerie Hume, in its thirty-fourth issue, “this is how it all began” for Transition. In a few years, it had become “an institution”.
Rajat Neogy established Transition as an avant-garde platform for East African literature and culture. Neogy published poetry, prose, scholarly articles, critical pieces, and artworks that reflected his magazine’s commitment to wide-ranging, cross-current debates on East Africa. He printed discussions on contentious topics such as race relations, freedom of expression, state policy, democracy, foreign aid, and human rights. The magazine attracted scholars from around the world, making Transition “Africa’s first forum of intellectual and artistic eclecticism” (Tabaire 2007, 196).
এন্থনি এপিয়াহ উল্লেখ করেছেন যে ট্রান্সিশনের পাতায় ‘স্বাধীন আফ্রিকার বুদ্ধিজীবীরা তাঁদের কণ্ঠস্বর খুঁজে পায়’। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে নিয়োগীর ম্যাগাজিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল, এর পাতায় সৃষ্টি হয় প্যান-আফ্রিকান সাহিত্য । ২০১৩ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত এম জি ভাসানজি, পিটার নাজারেথ ও নগুগি ওয়া থিওনগোর ইমেইল থেকে আমরা জানতে পারি যে স্বাধীনতাত্তোর পূর্ব আফ্রিকার সাহিত্য চেতনার উত্থান ঘটে ট্রান্সিশন ম্যাগাজিনে ।
উগান্ডায় এশিয়ান প্রবাসী
যদিও নিয়োগীর সম্পাদকীয় প্রবন্ধে আমরা ষাটের দশকের উগান্ডার ওবোতে-আমিন প্রশাসনের বাস্তব রূপ দেখতে পাই, তাঁর কবিতা ছিল পরাবাস্তববাদী, যেখানে নির্বাসন ও উৎখাতের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠে ।
প্রথম কবিতা ( ১৯৬১) শুরু হয় এক পরিভ্রমণকারীর অনুভূতি দিয়ে:
বহুবার, অনেক বার
হেঁটেছি আমি
পকেটে তামাকের ছাই
খালি পায়ে একটি শূন্যতা নিয়ে।
… আমার পেশী
স্রোতের মত ঢেউ খেলে
আর নদীর পানির নিঃশব্দ শব্দ
মাংস এবং পা দিয়ে আমি ভেসেছি
এবং আমি ভ্রমণ করেছি।
পৃথিবীর সাথে এক আদ্য একত্ব প্রতিফলিত হয়েছে কবিতার চতুর্থ স্তবকে:
আমি ঘুমিয়েছি
দেখেছি বেড়ে উঠা ঘাস
দাঁত দিয়ে সুবুজের স্বাদ নিয়েছি
জিভ দিয়ে ভোগ করেছি মিষ্টত্ব
মাটিকে চুম্বন করেছি ।
[…]
পাতন করেছি আমার পানীয়
আর খেয়েছি মাংস
দেখেছি জন্ম
প্রত্যক্ষ করেছি মৃত্যুকে।
বহুবার, অনেক বার।
তবে আজ আমি দেখেছি মানুষ
দুই মুষ্টি দিয়ে আঘাত করবো এই মাটিকে।
কিন্তু যাত্রা শেষ হয় হতাশা-বিষণ্নতা দিয়ে। পাঠক ঠিক বুঝে উঠতে পারে না কারা এই মানুষ গুলু যারা এইসব দেখছেন। কবিতাগুলো শুধু দুর্বোধ্য, রহস্যময় নয়, নিয়োগীর লেখায় আধ্যাত্মিকতার মাত্রাও অন্তর্ভুক্ত। ভ্রমণ একটি উপমা হয়ে ওঠে যার দ্বারা লেখক অনাত্মার সন্ধান পায়।
প্রথম কবিতায় যেই অস্বাচ্ছন্দ্যর অভিব্যক্তি আমরা খুঁজে পাই, তৃতীয় কবিতায় তা হয়ে যায় এক আধ্যাত্মিক সংকট। ভ্রমণের শেষপ্রান্তে এসে বর্ণনাকারীর অপ্রত্যাশিত স্থিরতা যেন এক মৃত্যু ।এই ভাবনাটা নিয়োগী বহুবার প্রকাশ করেছেন তাঁর কবিতায় , যেখানে ভ্রমণকারীরা যেন
পক্ষাঘাতগ্রস্ত
দরোজার চতুষ্কোণ প্রতীক দেখে
ভিতর আর বাহিরের মাঝে
একটি প্রায়শ্চিত্তের স্থান
মুক্তি নয় বরং ভ্রমণকারীর আগমন পক্ষাঘাত সৃষ্টি করে। ভ্রমণ শেষে তারা
… প্রবেশদ্বারে থমকে পরে
নড়িতে পারে না আর ।
আগমন যেন এক প্রকার অবরুদ্ধ । সেই কাঙ্খিত গন্তব্যস্থান থেকে ফিরে আসা অসম্ভব হয়ে ওঠে, তাই নিদারূণ আধ্যাত্মিক যন্ত্রণায় কাতর কথক ।আগমন কি তাহলে এক ধরণের মৃত্যু? জীবন যদি হয়ে যায় এক উত্তাল যাত্রা তবে কি গন্তব্যস্থান খুঁজে পাওয়া সম্ভব? যাত্রার শেষ কি অস্তিত্বের অবসান?
যেই অচলতা, স্থিরতার নিয়োগীর কবিতায় অভিব্যক্ত, সেটা পূর্ব আফ্রিকার এশিয়ান প্রবাসীদের অস্তিত্বগত যন্ত্রণার প্রতিফলন । এই কবিতাগুলো উগান্ডার স্বাধীনতা ঘোষণার এগারো মাস আগে প্রকাশিত হয় । যদিও উগান্ডা পিপল’স কংগ্রেস পার্টির নেতা মিল্টন ওবোতে বাণিজ্যিক খাতে প্রবাসী সম্প্রদায়ের অবদানের কথা স্বীকার করেন, তিঁনি উগান্ডাকে সত্যিকারের আফ্রিকান দেশ হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণা দেন । ১৯৬২ সালে ওবোতে ঘোষণা করেন যে ‘যারা উগান্ডার স্বার্থকে হৃদয়ে রাখে, তাদের গোত্র, জাতি বা ধর্ম যাই হোক না কেন আজকের উগান্ডায় তাদের জায়গা অবশ্যই আছে’ । স্বাধীনতার পর সাংগঠনিক পরিবর্তনের একটি নতুন যুগে প্রবেশ করে উগান্ডা, যখন প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ প্রবাসীদের কাছ থেকে আফ্রিকানদের কাছে হস্তান্তর করা হয় ।
Anthony Appiah notes that the “intellectuals of an independent Africa found their voice” in the pages of Transition (Appiah, Gates & Vazquez 1998). Neogy’s magazine played a pivotal role in the emergence of African literary culture in the mid-twentieth century, creating a pan African literary culture. During a series of email exchanges that took place from 2013 to 2015 between the author and key African scholars like M.G. Vassanji, Peter Nazareth and Ngugi wa Thiong’o, it emerged that Transition single-handedly promoted the emergence of post-Independent East African literary consciousness.
Asian Expatriates in Uganda
While Neogy’s editorials provide a perceptive but realist overview of the 1960s Uganda under the Obote-Amin regimes, his poetry gives voice to surrealist renditions of dis/placement and exile, as if to pre-empt the expulsions that were to occur later in the decade. The second issue of Transition published three untitled poems by Neogy. The first poem opens with the perambulations of a traveling narrator (1961):
Many times, too many times …
I have walked
with tobacco ash in my pocket
and an emptiness in my bare feet.
… with my muscles
Rippling like stream
And the noiseless sound of brook water
I have glided with flesh and my legs
And I have travelled.
By the fourth stanza, there is a suggestion of a primeval oneness with the earth:
I have slept
and watched grass growing
and tasted greenness with my teeth
and sweetness with my tongue
and I have kissed the earth.
[…]
I have brewed my liquid
and eaten meat.
I have seen birth
and witnessed death.
Many times, too many times.
But today I have seen men:
And I will beat the earth with my two fists.
The journey ends in despair; it is left unresolved as to who these men are and what the “seeing” of them entails. These poems are mystical, with intimations of spiritual dimensions and esoteric states of being. Travel serves as a self-evident metaphor for spiritual quest that locates a sense of “non-self” in the self.
What began as the restless dysphoria in the first poem succumbs into a spiritual crisis in the third. Having come to the end of all journeys, the narrator’s sudden immobility culminates into a kind of death of the soul, an idea that Neogy explores in later poems. Such travelers are:
… paralyzed by the
rectangular symbol of the door
A kind of purgatory between
outside and in
Arrival ushers in a state of paralysis rather than emancipation for those who:
travel
who arrive
and stand at the entrance
and cannot move
anymore.
Arrival is tantamount to entrapment; destination is experienced as a point of no-return resulting in spiritual anguish. Does “arrival” connote a kind of death of the self? When life is experienced as a tumultuous journey, can one ever reach a destination? And is the end of the journey analogous to an end of existence?
These deliberations on im/mobility in Neogy’s poetry form the basis of a much larger reflection on the existential anguish for the Asian expatriates in East Africa. These poems were published eleven months before the declaration of Uganda’s Independence. The leader of the Uganda People’s Congress, Milton Obote, announced plans to “Africanize” Uganda while acknowledging the contribution of the expatriate communities in the commercial sector. In 1962, Obote declared that “there is a place in the Uganda of today for all who have her interests at heart, whatever their tribe, race or creed” (cited in Nsubuga 68-69). Uganda entered a new era of organisational overhaul after independence, wherein administrative control was to be transferred from the expatriates to the Africans.
এশীয় প্রবাসীদের উপস্থিতি ঘিরে যে উত্তেজনা জড়ো হচ্ছিল তারই অনুরণন প্রতিফলিত হয়ে উঠে নিয়োগীর কবিতায় ভ্রমণ এবং অচলতার আলোচনায় ।স্বাধীনতা ছিল একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, তবে উগান্ডায় প্রবাসীদের সঠিক অবস্থা এবং স্থান নিয়ে ওবোতের সরকার কিছুই স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দেননি ।নিয়োগী সঙ্কল্পিত ছিল যে উগান্ডার রাজনৈতিক আলোচনা – বিশেষ করে প্রবাসীদের বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তহীন অবস্থান নিয়ে বিতর্ক – পত্রিকার পাতার বাইরে থাকবে না। নিয়োগীর সম্পাদকীয় নিবন্ধে এশিয়ান সম্প্রদায়ের উগান্ডায় (যেখানে নিওগির মতো অনেকের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা) অনাগরিকত্বের সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ পায়। প্রবাসী পরিস্থিতির এই গুরুত্বর অবস্থা গভীরভাবে অনুভব করেছিল নিয়োগী যার ব্রাহ্মণ পিতামাতা ১৯৩০-এর দশকে পূর্ব বাংলার ফরিদপুর থেকে কাম্পালায় আসেন। স্থানচ্যুতির অনিশ্চিয়তাই ছিল নিওগির কবিতায় অনুচ্চারিত প্রসঙ্গ। ট্রান্সিশনের প্রবাসী পাঠকদের কাছে ট্রেন, রেলপথ, আগমন ও প্রস্থানের কাব্যিক চিত্র গুরুত্বপূর্ণ এবং অত্যন্ত পরিচিত বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
আইনগতভাবে এবং আবেগগতভাবে সর্বদা প্রবাসী উদ্বেগের প্রতি মনোযোগী, ট্রান্সিশনের তৃতীয় সংখ্যায় ছাপানো হয় নিয়োগীর প্রবন্ধ যার শিরোনাম ছিল ‘জাতি মনোভাব’। এই নিবন্ধে নিয়োগী ‘ক্ষুদ্র বিভাগ এবং উপ-বিভাগ’ ও মানবজাতিকে বর্ণ এবং ধর্ম দ্বারা বিচ্ছিন্ন করার প্রবণতাকে তীব্রভাবে নিন্দা করেন। তবে নিয়োগী এটাও উল্লেখ করেন যে আফ্রিকানদের মধ্যে বিদ্যমান শক্তিশালী এবং ব্যাপক ভারত-বিরোধী মনোভাব এর জন্য ভারতীয়রাও দায়ী । আফ্রিকানদের প্রতি তাদের বৈষম্যমূলক আচরণ এই ভারত-বিরোধী মনোভাবকে উৎসাহিত করেছে।
যদিও বেশিরভাগ মানুষ স্বাধীনতার বিষয়ে আশাবাদী ছিল, অনেকেই “আফ্রিকানাইজেশন” বাস্তবায়িত করার প্রকৃতি এবং পদ্ধতি সম্পর্কে অনিশ্চিত ছিলেন। নিয়োগী ভারত-বিরোধী মনোভাব অপসারণ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন কারণ তিনি বিশ্বাস করেছিলেন যে তাদের অনেক ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও, এশিয়ান-উগান্ডারা জাতি-গঠনের উদ্যোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে । নিযোগী ছিল মুষ্টিমেয় বুদ্ধিজীবীদের একজন যাঁরা বিশ্বাস করেছিল যে প্রবাসীরা নতুন উগান্ডায় ইতিবাচক অবদান রাখবে।
১৯৬৭ সালে, ট্রান্সিশনের তেতত্রিশতম সংখ্যায় পল থেরাক্স এর নিবন্ধে জাতি সম্পর্কের উপর একটি তিক্ত অভিযোগ পাওয়া যায়। এই সংখ্যার অসাধারণ ফ্রন্ট কভারে ছিল কেনিয়ার ডেইলি নিউজ সংবাদপত্রের ক্লিপিংসের একটি কোলাজ। বোল্ড টাইপের শিরোনামগুলি ছিল ‘তানজানিয়া শহরে এশিয়ান দোকান বন্ধ করতে বলা হয়েছে’, ‘কেনিয়া ছয় এশিয়ানকে বহিষ্কার করেছে’, ‘এশিয়ানরা তাঁদের কর্ম ভোগ করছে’, ‘এশিয়ান সংস্থাগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে’ এবং আরো অনেক। থেরাক্স বলেন যে পূর্ব আফ্রিকায় এশীয় বিরোধী মনোভাব এর বীজ খুঁজে পাওয়া যায় ভারতীয়দের প্রতি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক মনোভাবের মধ্যে।
স্থানচ্যুতি এবং নির্বাসন
এই বিতর্কগুলি ১৯৬৮ সালে স্থবির হয়ে পড়ে যখন সরকারী প্রতিবেদনে নিয়োগীকে সিআইএ -এর প্রচার ফ্রন্ট কংগ্রেস ফর কালচারাল ফ্রিডম এর সাথে যুক্ত করা হয়। পরিস্থিতি অবনতি হয় ১৯৬৭ সালে যখন ট্রানজিশন উগান্ডার সংবিধানের সমালোচনা করে একটি নিবন্ধ ছাপিয়েছিল। যদিও নিওগি স্পষ্ট করে বলেন যে তিনি এবং তার উপ-সম্পাদক, ইজেকিয়েল এমফালেল, সিআইএ বিষয়ে অবগত ছিলেন না, ১৯৬৮ সালের ১৮ অক্টোবর জরুরী ক্ষমতা আইনের অধীনে নিয়োগীকে গ্রেফতার করা হয় এবং কারারুদ্ধ করা হয়। যদিও নিয়োগীর সাহিত্যিক বন্ধু এবং সহ-সম্পাদক, পল থেরাক্স এবং আলী মাজরুই, প্ররোচিতভাবে যুক্তি দিয়েছিলেন যে ম্যাগাজিনের বামপন্থী ঝোঁক কমানোর জন্য সিআইএ-র সাথে সম্পর্কটি মিল্টন ওবোটের দ্বারা সাজানো হয়েছিল, তবে সিআইএ যে আসলেই ট্রান্সিশনের তহবিল করেছে সেটা অস্বীকার করা যাবে না।নিয়োগী সিআইএ-সিসিএফ এর সাথে জড়িত থাকার বা জানার কথা অস্বীকার করে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, বেশ কয়েকজন ইতিহাসবিদ এবং অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা আবিষ্কার করেছেন যে সিআইএ-সিসিএফ এশিয়ার এক ডজনেরও বেশি বামপন্থী সাহিত্য পত্রিকার পৃষ্ঠপোষক ছিল। এর মধ্যে রয়েছে ভারতের Quest, জাপানের Jiyu, ফ্রান্সের Preuves ও Paris Review জার্মানির Der Monat লন্ডনের Encounter, দক্ষিণ আমেরিকার Mundo Nueovo, আর আফ্রিকার Transition । eটা ছিল সিআইএ -এর সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং কমিউনিজমের বিরুদ্ধে ভিন্নমত জাগিয়ে তোলার জন্য ঠান্ডা যুদ্ধের কৌশলের অংশ (হোইটনি ২০১৬) ।
Themes of travel and im/mobility have special resonance considering the tension that was gathering around the presence of the Asian expatriates (Mowtushi 2021). Independence was a historic moment, and the Obote government left unanswered the exact status and place of these expatriates in Uganda. Neogy ensured that discussions on Uganda’s political climate – especially debate on the government’s indecisive stance on expatriates – did not go out of print. His editorial decisions indicate the mounting concern with which Neogy and the Asian community regarded the possibility of non-citizenship in Uganda, where many, like Neogy, were born and raised. This urgency of the expatriate situation was not lost on Neogy, whose Brahmin bhadrolok (genteel) parents came as expatriates to Kampala from Faridpur in East Bengal in the 1930s (Benson 1985). The unspoken referent in Neogy’s poetry is the uncertainty of displacement. Images of trains and railroads, and leitmotifs of arrivals and departures are therefore important overarching tropes that would have struck a familiar chord with Transition’s expatriate readers.
Attentive to expatriate anxiety, legally and affectively, the third issue of Transition was prefaced by a well-timed editorial by Neogy on “Race Attitudes”, where he denounced the “petty divisions and sub-divisions” that “desegregate” humans by color, creed, and religion. More explosively, Neogy claimed that Indians in Uganda are themselves responsible for the anti-Indian prejudice that exist among Africans because of their discriminatory attitude towards Africans.
Even though most people were optimistic about Independence, many were unsure about the exact nature and method by which “Africanisation” would be realized. Neogy called for measures to curtail anti-Indian prejudice because he believed that despite their many shortcomings, Asian-Ugandans would co-operate in nation-building ventures. Neogy is among a handful of intellectuals who believed that expatriates would contribute positively to the new Uganda.
A bitter indictment on race relations came from Paul Theroux (1967) on the “Asian Question” in the 33rd issue of Transition. The issue brought out a remarkable front cover featuring a collage of newspaper clippings from Kenya’s Daily Nation. The headlines in bold type read: “Asian Shops In Tanzania Town Told To Close”, “Kenya Deports Six Asians:”, “Asians Only Reaping The Harvest”, “Asian Firms Are Warned”, and so on. Recounting the panic surrounding the “conspiratorial” plot to expel Asians (called “semi-colonials” by some Africans), Theroux (1967) averred that the beginnings of anti-Asian prejudice in East Africa had roots in British colonial attitude towards Indians.
Displacement and Exile
These debates came to a standstill in 1968 when government reports connected Neogy with the CIA’s propaganda front, the Congress for Cultural Freedom (CCF). To make matters worse, the previous year, Transition printed an article critiquing the Constitution of Uganda. Although Neogy clarified that he and his sub-editor, Ezekiel Mphalele, were unaware of the CIA-CCF link-up, the situation escalated uncontrollably, leading to Neogy’s arrest and imprisonment on October 18, 1968, under the Emergency Powers Act. Even though Neogy’s literary friends and co-editors, Paul Theroux and Ali Mazrui, persuasively argued in future issues of Transition that the association with the CIA was orchestrated by Milton Obote to curtail the magazine’s left-wing leanings, there was no repudiating the fact that CCF did in fact fund Transition. Neogy denied any involvement in or knowledge of the CIA-CCF association in the [number] issue of Transition. In recent years, several historians and investigative journalists have uncovered how CCF sponsored more than a dozen left-wing literary magazines in Asia (Quest in India and Jiyu in Japan), Europe (Preuves and the Paris Review in France, Der Monat in Germany, and Encounter in London), Africa (Transition), and South America (Mundo Nueovo) as part of Cold War strategies to stir dissent against the Soviet Union and Communism (Whitney 2016).
রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে অসন্তুষ্ট হয়ে নিওগি ১৯৭০ সালে তার জন্মস্থান কাম্পালা ত্যাগ করে আক্রায় চলে যান, যেখান থেকে তিঁনি ট্রানজিশনের তত্ত্বাবধান চালিয়ে যান এবং ১৯৭৩
সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেন ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক পিটার কোলম্যান ১৯৮০ -এর দশকে সান ফ্রান্সিসকোর মিশন ডিস্ট্রিক্টে নিওগির সাথে সাক্ষাতের কথা স্মরণ করেন (২০১০) । যদিও কোলম্যান উল্লেখ করেন যে সেখানের একটি সংবাদপত্রের জন্য কাজ করছিলেন নিয়োগী তাঁর প্রকৃত আর্থিক অবস্থা এবং তাঁর অসুস্থতা নিয়ে তেমন কিছুই বলা হয়না । সান ফ্রান্সিসকোতে তিনি তার বাকি দিনগুলি কাটিয়েছিলেন — ‘শীতল, বিচ্ছিন্ন এবং যদিও সহায়ক তিনি স্পষ্টতই একজন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ ছিলেন” । সান ফ্রান্সিসকোতে যাওয়ার পর নিয়োগীর জীবনে একটি ধীরগতি ক্ষয়ের লক্ষণ পাওয়া যায় ।১৯৯৬ সালে নিয়োগীর কথা বলতে গিয়ে থেরাক্স উল্লেখ করেন যে আফ্রিকা ছাড়ার পর তার সৃজনশীল শক্তি সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হয়ে যায়, ‘প্রায় অদৃশ্য হয়ে যায়’ । ১৯৯৫ সালে নিওগির মৃতদেহ সান ফ্রান্সিসকোর একটি হোটেলে পাওয়া যায়, তাঁর বয়স ছিল মাত্র ৫৭।
তবে তাঁর আবিষ্কার ট্রান্সিশনের মাধ্যমে নিয়োগী চিরকাল আফ্রিকাতে রয়ে যাবে। পশ্চিম আফ্রিকায় স্থানান্তরিত হওয়ার পর, ম্যাগাজিনটি শেষ পর্যন্ত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আফ্রিকান এবং আফ্রিকান আমেরিকান গবেষণার কেন্দ্র হাচিন্স সেন্টারে স্থানান্তরিত হয়। যেই ম্যাগাজিনটিকে এক সময় অশ্লীল ও বামপন্থি বলা হতো, সেটা এখনো বিকশিত হচ্ছে, এবং এখনো ট্রান্সিশন একটা অপরিহার্য প্রতিষ্ঠান। ম্যাগাজিনের চল্লিশতম সংখ্যায় (১৯৭৪) ওলে সোয়িঙ্কার একটা ব্রডশীট ছাপা হয় যেখানে নিয়োগীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে সোয়িঙ্কা বলেন যে সে ছিলেন একজন সাহসী গল্পের সংগ্রাহক:
‘আমরা রজতকে বিদায় জানাই কিন্তু সৌভাগ্যবশত তার সৃষ্টিকে নয়। আমাদের ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণু এবং অসহনমূলক সময়ে যেই মূল্যবোধগুলোর জন্য এই ম্যাগাজিনটি তিঁনি সৃষ্টি করেছিলেন, সেগুলোর প্রাসঙ্গিকতা এখনো হারিয়ে যায়নি । তাঁর আশীর্বাদে ট্রান্সিশন চলবে’।
ট্রান্সিশন একটি বুদ্ধিজীবী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে যা আত্মায় আফ্রিকান কিন্তু দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্বব্যাপী।
সমাপ্তি
তার সংক্ষিপ্ত কিন্তু ঘটনাবহুল কর্মজীবনে, রজত নিওগী একটি বহুমুখী কাজ রেখে গেছেন যা স্থানান্তর, স্থানচ্যুতি এবং নির্বাসনকে প্রতিফলিত করে। তাঁর কবিতায় আমরা দুই ধরনের ভ্রমণ খুঁজে পাই: প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সীমানা অতিক্রম করে বহিরাগত বিশ্বের প্রকৃত স্থানগুলির মধ্যে বাহ্যিক ও শারীরিক ভ্রমণ; এবং স্থানচ্যুত বর্ণনাকারীদের রহস্যময়, অন্তর্মুখী আধ্যাত্মিক কাব্যিক যাত্রা। তাঁর কবিতায় নামহীন, মুখহীন ব্যক্তিগুলি কোনো জায়গায় অন্তর্গত নয় এবং তাঁদের কোনো গন্তব্যস্থান নেই। তাঁর বিমূর্ত গদ্য-কবিতা উগান্ডার প্রবাসী সম্প্রদায়ের বিচ্ছিন্নতার একটি অভিব্যক্তি ।১৯৬০-এর দশকের শেষের দিকে ইদি আমিন প্রশাসন যাদেরকে নির্বাসিত করেছিল নিয়োগীর কবিতা তাঁদেরই কথা বলে। নিয়োগী একজন উগান্ডান-বাঙালি যিনি একটি উত্তেজনাপূর্ণ রাজনৈতিক, জাতীয় এবং ব্যক্তিগত পরিবর্তনের মুহূর্তে আফ্রিকায় বসবাস করছিলেন। নির্বাসনের দুঃখ প্রকাশের জন্য তিনিই ছিলেন সঠিক সময়ের সঠিক ব্যক্তি।
Distressed by the political situation, Neogy left Kampala his birthplace for Accra in 1970, from where he continued to oversee Transition before taking permanent exile in the United States in 1973. The political analyst Peter Coleman (2010) recalls meeting Neogy in the 1980s in Mission District in San Francisco where the latter supposedly worked for a newspaper; nothing was revealed about how Neogy was supporting himself with no money and failing health. The move to San Francisco ushered in a kind of slow decay for Neogy, where he lived the remainder of his days “cool, detached, and helpful [though] he was obviously a damaged man” (Coleman 2010, 19). Speaking of Neogy in 1996, Theroux avers that leaving Africa completely eviscerated his creative energy; he “just about vanished”, only to be found dead a decade later in a hotel in San Francisco. Neogy was fifty-seven years old.
Something of the spirit of Neogy remained in Africa through his “brainchild”. After being relocated to West Africa, the journal moved eventually to the Hutchins Center for African and African American Research at Harvard University. From being branded “[n]asty [and] left-wing”, pornographic and seditious, Transition has continued to evolve as “an institution” (Hume 1967). The forty-fourth issue of Transition printed a special broadsheet by Wole Soyinka (1974) that paid homage to Neogy as the “undaunted” collector of stories:
We say farewell to Rajat but fortunately not to Transition, his creation.
In our increasingly intolerant and repressive time, the values for which
he created the magazine gain rather than lose relevance, and with his
blessing, Transition will carry on.
Transition continues to “carry on” to this day and to uphold something of Rajat Neogy’s undaunted ethos, becoming an intellectual institution that is African in spirit but global in reach and outlook.
Conclusion
In his short but eventful career as poet and editor, Rajat Neogy left behind a versatile body of work that reflects migrations, displacements and exiles. Discernible in his oeuvre are two types of movements: the outward, physical journeys undertaken between actual places in an external world crisscrossed by often contested national and international boundaries; and the mystical, inward-looking spiritual poetical journeys of de-territorialised and displaced narrators across indefinite and porous terrains of a vast ur-space. The nameless, faceless figures in his poetry belong nowhere, and have nowhere to go to. Neogy’s abstract prose-poetry serves as a cultural expression of the alienation of the expatriate communities in Uganda who were eventually deported by the Idi Amin administration in the late 1960s. As a Ugandan-Bengali living on borrowed time in the politically charged atmosphere after independence, Neogy was uniquely placed to experience and critically examine the trauma of exile at a moment of national and personal transitions.
References
Adesokan, Akin. 1996. ‘Retelling a Forgettable Tale: Black Orpheus and Transition Revisited’. African Quarterly on the Arts. 1(3), 49-57.
Appiah, Anthony, Gates, H.L., and Vasquez, M.C. 1998. Transition: The Anniversary Issue. Durham: Duke University Press.
Benson, Peter. 1985. Black Orpheus, Transition and Modern Cultural Awakening in Africa. California: University of California Press.
Coleman, Peter. 2010. The Last Intellectuals: Essays on Writers and Politics. Sydney: Quadrant Books.
Hume, Valerie. 1967. ‘How it all Began’. Transition. 34, 35-36.
Mowtushi, Mahruba. 2021. ‘The air we breathe, a forgotten colour: Rajat Neogy and the Transition poems, 1961-1963. Crossings. 12, 93-107.
Neogy, Rajat. 1961. ‘Poems’. Transition. 1, 37.
Neogy, Rajat. 1962. ‘Race Attitudes’. Transition. 3, 38.
Nsubuga, Godfrey E.N. 2012. The Person of Milton Obote: A Classic Personality Study. Kampala: Nissi Publishers Ltd.
Soyinka, Wole. 1974. ‘Farewell Rajat’. Transition. 44, 4.
Tabaire, Barnard. 2007. ‘The Press and Political Repression in Uganda: Back to the Future?’ Journal of Eastern African Studies.1(2),193-211.
Theroux, Paul. 1967. Hating the Asians. Transition. 34, 46-51.
Theroux, Paul. 1996. ‘Obituary: Rajat Neogy’. The Independent. Available at: http://www.independent.co.uk/news/people/obituary-rajat-neogy-1324133.html
Whitney, Joel. 2016. Finks: How the CIA Tricked the World’s Best Writers. New York: OR Books
Featured Image
ট্রান্সিশন ম্যাগাজিনের কভার (৩৩, ১৯৬৬)
Transition front matter
Acknowledgements
I am especially grateful to Dr Mafruha Mohua (QMUL) for her brilliant translation of the article. As a polyglot, Mafruha is passionate about languages. I would also like to thank Malini, Liam and Oznur for their comments on earlier versions of this article.
Disclaimer: Translated into Bengali by Dr Mafruha Mohua. Issues journal shall not be responsible for any inaccuracies or errors, both direct and indirect, in the translation. If any questions arise concerning the accuracy of the information presented by the translated version, please refer to the English content of the same.